1. admin@alifnews24.com : admin :
  2. maniknews1980@gmail.com : Mahadi Hasan : Mahadi Hasan
  3. llllashim@gmail.com : newseditoralif :
April 27, 2024, 9:35 pm
Title :
জলঢাকায় প্রেসক্লাবে এমপির বিরুদ্ধে মিথ্যা  অপপ্রচার করায় সংবাদ সম্মেলন করলেন যুবলীগ!  ভারতীয় মশলায় ক্যানসারের উপাদান, ব্যবস্থা নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র সম্পাদকীয় – চিকিৎসক ও জনবল সঙ্কটে ধুঁকছে গ্রামীণ হাসপাতাল সৈয়দপুরে জামায়াতের উদ্যোগে সালাতুল ইস্তিস্কা নামাজ আদায় ও দোয়া অনুষ্ঠিত সম্পাদকীয় – সড়ক-নৌপথে বাড়ুক নিরাপত্তা, বন্ধ হোক মৃত্যু লালমনিরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় শ্যালিকা-দুলাভাই নিহত সারাদেশে হিটস্ট্রোকে ৭ জনের মৃত্যু সম্পাদকীয় – সন্ত্রাসে ব্যবহৃত হচ্ছে কিশোররা, পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন জলঢাকায় উপজেলা নির্বাচনে ৪ জন চেয়ারম্যান সহ ১২ জনের মনোনয়নপত্র জমা জলঢাকায় পৌর উপ-নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীরা ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত জলঢাকায় প্রানিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রদর্শনী উদ্বোধনী ও সমাপনী  নীলফামারীর রামগঞ্জ দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপন নীলফামারীতে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন বর্ষ বরণ ঈদের দিনেও থেমে নেই বর্বরতা: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১২২ নীলফামারীতে সুষ্ঠুভাবে চলছে ভিজিএফ’র চাল বিতরণ জলঢাকায় সাংবাদিকদের নিয়ে জামায়াতের ইফতার মাহফিল  নীলফামারীতে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার চুরি করে পালানোর সময় ২জন গ্রেপ্তার নীলফামারীতে যুবলীগের ইফতার মাহফিল Start Selling Bitcoin When This Happens, This Quant Says Borroe Finance presale momentum attracts BNB and Tron whales

ঐতিহ্যের প্রতিক সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ

জয়নাল আবেদীন হিরো স্টাফ রিপোর্টার:
  • Update Time : Tuesday, March 19, 2024,
  • 27 Time View

মুসলিম ঐতিহ্যের এক অনন্য নিদর্শনের নাম ‘চিনি মসজিদ’। রঙিন চকচকে চিনা মাটির টুকরো দিয়ে মোড়ানো প্রাচীন ও ঐতিহাসিক এই স্থাপনার অবস্থান নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের ইসলামবাগ এলাকায়।

সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়কের সাথেই আপন সৌন্দর্যে চিরভাস্বর হয়ে রয়েছে দেড়শত বছর ধরে। এর দৃষ্টিকাড়া ব্যতিক্রমী কারুকার্য মূহুর্তেই মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের। ৪৮ টি মিনার ও ৪ টি গম্বুজ নিয়ে স্থাপিত মসজিদটি ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমলে বর্ধিত হয়েছে। মূল অংশটি মধ্যভাগে অবস্থিত।

জানা যায়, ১৮৬৩ সালে হাজী বাকের আলী ও হাজী মুকু নামের দু’জন ধর্মপ্রাণ বাসিন্দা ছন ও বাঁশ দিয়ে প্রথমে মসজিদটি নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহায়তায় তা টিনের ঘরে রূপান্তরিত হয়।পরে এলাকার লোকেরা মসজিদটি নির্মাণের লক্ষে তাদের মাসিক আয়ের একটি অংশ দান করে ফান্ড গঠন করেন। এরপর শুরু হয় মসজিদের নির্মাণ কাজ। শঙ্কু নামের জনৈক হিন্দু রাজমিস্ত্রী দৈনিক ১০ আনা মজুরিতে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। স্থানীয় লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে তাকে সাহায্য করে।

মসজিদের সৌন্দর্য বাড়াতে মসজিদের দেয়ালে চিনামাটির থালা, কাপ ও পিরিচের ভগ্নাংশ ও কাঁচের ভগ্নাংশ বসানো হয়। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘চিনি করা’ বা ‘চিনি দানার কাজ করা’। এখান থেকেই মসজিদের নাম হয়- চিনি মসজিদ বা চীনা মসজিদ। সৌন্দর্যের কাজে ব্যবহৃত চিনামাটির উপকরণসমূহ আনা হয়েছিল কলকাতা থেকে। ঐতিহাসিক এই মসজিদের নকশা করেন মো. মোখতুল ও নবী বক্স। মসজিদে একসঙ্গে প্রায় পাঁচ শতাধিক লোক নামাজ আদায় করতে পারেন।

মসজিদটির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন হাজী বকর আলী ও পরবর্তীতে তাঁর ছেলে হাজী হাফেজ আব্দুল করিম। প্রথম ইমামের নাম মৌলভী আব্দুল্লাহ আর মুয়াজ্জিন জুম্মন মিয়া।  বর্তমান পরিচালনা কমিটির সভাপতি সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিটলার চৌধুরী ভলু। ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন হাফেজ মাওলানা সাঈদ রেজা, মুয়াজ্জিন হিসেবে রয়েছেন হাফেজ আরিফ রেজা ও খাদেমগিরি করছেন মুহাম্মদ এরশাদ।

পরিচালনা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা মো. আবুল কাশেম (৭৫) বলেন, আমার দাদার আমলে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেসময় অত্র এলাকায় মাত্র একটি মসজিদ ছিল। বড় মসজিদ নামের ওই মসজিদ আমাদের বাড়ি থেকে বেশ দূরে হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দা হাজী নকর আলী ও হাজী মোখদু কিছু লোকজনের সাথে আলোচনা করে সবাই সম্মত হওয়ায় এই মসজিদ তৈরির উদ্যোগ নেন।

দুই হাজী মিলে মহল্লাবাসীকে ডেকে তাঁদের মধ্য থেকে কয়েক জনকে সর্দার নির্বাচন করলেন। প্রত্যেকের অধীনে ৪০ জন করে লোক দেওয়া হল। এই সরদারগণ প্রতি ঘর থেকে দৈনিক এক মুঠো করে চাল সংগ্রহ করতেন। প্রতি বৃহস্পতিবার এই চাল বিক্রি করে টাকায় পরিণত করা হত। এভাবে কিছু টাকা জমা হল। মহল্লাবাসীর সিদ্ধান্তে মসজিদের দালান তৈরি করা হল। মসজিদের উন্নয়নের স্বার্থে এলাকাবাসী স্বেচ্ছায় তাঁদের ১ মাসের পুরো বেতন দান করেছিলেন। উল্লেখ্য তখন মাসিক বেতন ছিল ১৩-১৫ টাকা। মসজিদ প্রতি বছর চুন করা হত।

মসজিদ কমিটির সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, মসজিদটি নির্মাণ করেন শঙ্খ নামের এক হিন্দু মিস্ত্রী। তাঁর পারিশ্রমিক ছিল দিন প্রতি ১০ আনা। এর বুনিয়াদ প্রথমে ৩০”, তারপর ২০” ও উপরে ১৫”। মসজিদটি তৈরি করতে কোন সহকারি মিস্ত্রীর প্রয়োজন পড়েনি। মহল্লাবাসী নিজেরাই এ কাজ সম্পাদন করেন। সে সময় কোন সিমেন্ট ছিলনা। তাই সুরকি ও চুন দিয়ে গাঁথুনি দেওয়া হয়। মহল্লার মহিলাগণ ঢেঁকি কুটে সুরকি তৈরি করতেন। মহল্লার কিছু লোক কলকাতা বেড়াতে গিয়েছিলেন। তাঁরা সেখানে দেখলেন চীনা কোম্পানির চিনামাটির তৈরি প্লেটের টুকরা পড়ে আছে। কোম্পানির অনুমতি সাপেক্ষে তাঁরা সেগুলো নিয়ে আসেন। শঙ্খ মিস্ত্রী এবং মহল্লাবাসী মিলে সিমেন্ট দিয়ে সেগুলো মসজিদের দেওয়ালে লাগালেন। এই মসজিদের নকশাকারী ছিলেন মোঃ মখতুল এবং নবী বখ্স।

পুরো মসজিদটির নির্মাণ কাজ তিন ভাগে বিভক্ত। প্রথম অংশ (মধ্য স্থানে) বৃটিশ আমলে নির্মিত। দ্বিতীয় অংশ (উত্তর পার্শ্বে) পাকিস্তান আমলে এবং তৃতীয় অংশ (দক্ষিণ পার্শ্বে) স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ আমলে নির্মিত। প্রথম ভাগটির মেঝেতে মর্মর পাথর বিছানো আছে। মসজিদের ডানদিকে বিছানো এই মর্মর পাথরটি এলাকাবাসী কলকাতা থেকে প্রতি টুকরা ৬ আনা করে কিনে এনেছিলেন। কোলকাতার কোম্পানি কর্তৃপক্ষ এখানে এসে পাথরগুলো বসিয়ে যান। বৃটিশ আমলে তৈরিকৃত অংশটুকুর মোট নির্মাণ ব্যয় ছিল ৯৯৯৯ রূপিয়া ১০ আনা।

দ্বিতীয়ভাগটির মেঝেতে এ ধরনের কোন পাথর নেই। এ ভাগের তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এলাকার তৎকালীন সদর ও সেক্রেটারী জনাব মোঃ ওসমান, মো. সফি সুফি, মো. ইয়াজদানি, মো. মফিজ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ। মসজিদটি তৈরি করতে আরও যে ব্যক্তির অবদান অনস্বীকার্য তিনি হলেন হাজী বকর আলীর ছেলে হাজী হাফেজ আব্দুল করিম। তিনিই সর্বপ্রথম গোলাহাট রেললাইনের দু’পাশে কবরস্থানের ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে মাস্টার ইসরাফিলের ভাই ও আব্দুল গফুরের ছেলে হাফেজ ইদ্রিস এই এলাকার নামকরণ করেন ইসলামবাগ।

মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ আরিফ রেজা বলেন, মসজিদের পশ্চিম দিকে একটা বাড়ি ছিল। বাড়ির মালিক মো. গাউসিয়া জায়গাটি দিতে অস্বীকার করেন। তাছাড়া সে সময় বৃটিশ সরকার সেখানকার সব বাড়ি সরিয়ে পূর্ব দিকে নিয়ে আসে। সে জায়গায় বৃটিশ সরকার খ্রীস্টানদের কবরস্থান বানায়। যা আজও বিদ্যমান। একারণে মসজিদের পিছনে কোন জায়গা নেই। আর সামনে মসজিদ ঘেঁষে রাস্তা। তাই মূল মসজিদের দুই পাশে বর্ধিত করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় তলা নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও বিশেষ দিনে মুসল্লীদের জায়গা সংকুলান হয়না। তবে দক্ষিণ পার্শ্বে আরও জায়গা আছে। সরকারী সহায়তা পেলে ওইখানে নতুন বহুতল ভবন নির্মাণ করা গেলে এই সমস্যা দূর হবে।

মসজিদটি দেখতে প্রতি বছর পাকিস্তান,
ভারত,ইন্দোনেশিয়া,নেপাল,ভুটান,ইরান,কাতাসহ বিভিন্ন দেশের পর্যটকরাআসেন ৷

মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লী ছাবেদ আলী বলেন, বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ আর সৈয়দপুর হলো মসজিদের নগরী। এই শহরের মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম ও ঐতিহ্যবাহী মসজিদ এই চিনি মসজিদ। যা নির্মাণ শৈলী ও কারুকার্যের ভিন্নতার কারণে মুসলিম জাহান তথা বিশ্বের মধ্যে বিরল। এর উন্নয়নে ও শ্রীবৃদ্ধি করণে সরকারী পৃষ্ঠপোশকতা প্রয়োজন। বিশেষ করে নকশার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য আধুনিক ও উন্নতমানের পরিষ্কারক উপকরণ দিয়ে পুরো মসজিদের চিনা মাটির টুকরোগুলো পলিশ করা দরকার। তাহলে মসজিদটি হারানো সৌন্দর্য ফিরে পাবে ৷

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
চৌধুরী মিডিয়া গ্রুপ এর একটি প্রকাশনা© All rights reserved 
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: FT It